বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যুর পরিস্থিতি (৪.১)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বাংলাদেশের জনসংখ্যা পরিচিতি | - | NCTB BOOK
62
62

বাংলাদেশে ১৯৮০ সালে মাতৃমৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৬৫০ জন। ১৯৯০ সালে এ সংখ্যা ৫৭৪ জন, ২০০১ সালে ৩২২জন এবং ২০১০ সালে মাতৃমৃত্যুর সংখ্যা কমে ১৯৪ জন হয়। বিশ্বব্যাংক প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ সালে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ১৭৬জন (প্রতি লক্ষে)। ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এটা প্রতি লক্ষে ১৫৬জন।

মাতৃমৃত্যুর কারণ

আমাদের দেশে বাল্যবিবাহের কারণে মেয়েরা অল্পবয়সে গর্ভধারণ করে। গর্ভকালে, অবহেলা, অজ্ঞতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি প্রভৃতি কারণে মায়েরা প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না। ফলে তারা মাতৃত্বকালীন নানা জটিলতায় ভোগে এবং মৃত্যুবরণ করে। তাছাড়া মাতৃমৃত্যুর আরও অনেক কারণ রয়েছে। যেমন-নিম্ন জীবনযাত্রা, বিশুদ্ধ পানির অভাব ও দুর্বল সেনিটেশন ব্যবস্থা, নারী শিক্ষার অভাব, চিকিৎসার অভাব, ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাত, প্রসবকালীন উচ্চ রক্তচাপ, একলেমশিয়া প্রভৃতি।

মাতৃমৃত্যুর প্রভাব

বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যুর কারণে শিশু প্রয়োজনীয় পুষ্টি হতে বঞ্চিত হয়। ফলে শিশু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে শিশু মৃত্যুবরণ করে। মাতৃহারা শিশুর সুষ্ঠু সামাজিকীকরণে সমস্যা হয়। মাতৃমৃত্যুর কারণে সদ্য জন্মগ্রহণকারী শিশুর জন্য মায়ের দুধের বিকল্প দুধের প্রয়োজন হয়। এতে অনেক ক্ষেত্রেই শিশু পেটের পীড়া কিংবা অন্য সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে। ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়। দরিদ্র পরিবারের জন্য এই অর্থ খরচ একটি বাড়তি চাপ। অনেক ক্ষেত্রে মাতৃমৃত্যু পারিবারিক বিশৃঙ্খলতার অন্যতম কারণ। শিশুর প্রতি পিতার অধিকতর যত্নশীল ভূমিকা মাতৃমৃত্যুর প্রভাব লাঘবে সহায়ক হতে পারে।

common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion